এবার তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয়রা। নামাজ শেষে বৃষ্টি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৭টায় মোরেলগঞ্জ উপজেলার আজিজিয়া স্কুল মাঠে খোলা আকাশের নিচে এ নামাজের আয়োজন করেন মুসল্লিরা।
নামাজে মোড়লগঞ্জ পৌরসভার তালুকদার মনিরুল হকসহ বিভিন্ন এলাকার নানা বয়সী ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। এর আগে জায়নামাজ নিয়ে মাঠে জড়ো হন মুসল্লিরা। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পৌরসভা বাজার মসজিদের খতিব ও ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ আলী ।
এদিকে হাফেজ মো. হাসান বলেন, অনাবৃষ্টি ও অতি তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এ অবস্থায় আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমরা নিরুপায়। তাই এই দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টি লাভের আশায় আকাশের নিচে মাঠে ইসতিসকার নামাজ (সালাতুল ইসতিসকার) আদায় করা হয়েছে। নামাজ শেষে আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে মাফ চেয়ে কান্নাকাটি করেছি।
সহিহ মুসলিমের এক বর্ণনায় এসেছে, আনাস ইবনু মালিক রা. থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি জুমার দিনে দারুল কাযার দিকের দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। ঐ ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামলে গিয়ে দাঁড়াল এবং বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সম্পদ বিনষ্ট হল।
রাস্তা ঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। বৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন। আনাস রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় হাত তুলে বললেন, হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে বৃষ্টি দিন।
আনাস রা. বলেন, আল্লাহর কসম আমরা আকাশে কোনো মেঘ দেখেনি। আমাদের এবং সালা পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে কোনো ঘরবাড়িও ছিল না। হঠাৎ পাহাড়ের পশ্চাৎ দিকে হতে তীরের ন্যায় এক খণ্ড মেঘ উদিত হল। যখন তা মধ্যাকাশে পৌঁছাল তখন তা ছড়িয়ে পড়ল। এরপর বর্ষণ শুরু হল। রাবী বলেন, আল্লাহর কসম, আমরা এক সপ্তাহ পর্যন্ত সূর্য দেখিনি।
এ সময় আয়োজকরা জানান, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি গাছপালাসহ সবাই খুব কষ্টে আছেন। এজন্য তারা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়েছেন। নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে গেছে। দিন যায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে বাগেরহাটে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।